আমাদের প্রত্যেকের জীবনে স্বপ্ন এবং প্যাশন থাকে।এই প্যাশনটা কিভাবে পেশাতে যুক্ত করলে এমন একজন সাফল্যবান উদ্যোক্তা এবং প্রস্থেটিক মেকাপ আর্টিস্ট কে নিয়ে আজকের গল্প।
তার নিজস্ব প্রতিবেদনের আলোকে
নাম স্বর্ণা ভৌমিক।
পেশায় আর্ট এন্ড ক্রাফটস টিচার, উদ্যোক্তা এবং প্রস্থেটিক মেকাপ আর্টিস্ট।
ছোটবেলা থেকেই আমার চারপাশের পরিবেশ ছিলো শিল্পকর্মে জড়িত। আমার মা অনেক শৈল্পিক চিন্তাভাবনার একজন মানুষ তার ইচ্ছা ছিলো তার মেয়েও তার মত হবে তাই প্রথম আর্টের হাতেখড়ি দিয়েছিলাম আমাদের এলাকার একটা আর্ট স্কুলে ক্লাস টু তে থাকা অবস্থায়। এরপর আর কখনো শিখিনি।
২০১৪ সালে হ্যালোউইন মেকাপ করার সময় কেমন একটা বিরক্ত লাগছিলো এটা ভেবে যে এসব তো ফেক লাগে। তারপর শুরু হয় আমার স্পেশাল ইফেক্টস, এসএফএক্স, প্রস্থেটিক মেকাপ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা এবং প্র্যাক্টিস।যত জানতে শুরু করলাম তত আমার আগ্রহ বেড়ে যায় এই সেক্টরের প্রতি। ছোটবেলা থেকেই আমার হরর বিষয়টা খুব টানতো অবশ্য। বাংলাদেশে প্রস্থেটিক মেকাপ কিট বলতে গেলে নেই, প্রথম বাধা সৃষ্টি হয় মেকাপ কিট নিয়ে যা চাচ্ছিলাম পাচ্ছিলাম না। তারপর ভাবলাম আগে লো বাজেটে প্র্যাক্টিস করি, প্র্যাক্টিস করতে করতেই এতোদূর আসা আমার।
প্রথম থেকেই আমার পরিবার,পরিচিতরা আমাকে এই বিষয়ে সাপোর্ট করেছেন। তাদের সাপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশে এই সেক্টরকে প্রফেশন করার মত সাহস হয়তো আমার হতো না।
বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি বেশিদিন হয় নি আমার। ভালো কাজ দেয়ার জন্যই ইন্ডাস্ট্রিতে দেড়ি করে আসা। এতোবছর আমি বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করে নিজের কাজকে ভালো করার চেষ্টা করেছি, এই সেক্টর জানার চেষ্টা করেছি।
গতবছর নিউইয়র্কের এসএফএক্স মেকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করি এবং বিজয়ী হই। সেই প্রতিযোগিতায় ১৫ টা দেশের এসএফএক্স মেকাপ আর্টিস্ট অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমিই বাংলাদেশের প্রথম প্রস্থেটিক/এসএফএক্স মেকাপ আর্টিস্ট যে ইন্টারন্যাশনাল এসএফএক্স মেকাপ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে৷
এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটা শর্টফিল্ম,টিভিসিতে প্রস্থেটিক মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছি৷ কিছুদি৷ আগে একটা আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে কাজ করেছি এবং আরো কয়েকটা আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে কাজ করার কথা চলছে।
আমি আমার একটা টিম তৈরি করছি কারণ আমি আশাবাদী বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হলিউডের মত প্রস্থেটিক মেকাপের কাজ হবে একদিন এবং সেদিন আমি আমার টিম নিয়ে কাজ করবো।
আমি কৃতজ্ঞ আমার সৃষ্টিকর্তার কাছে এবং আমার পরিবার,পরিচিতদের কাছে।এবং সেইসকল মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ থাকবো সারাজীবন যারা আমার কাজের উপর বিশ্বাস রেখেছে।
নিজের কাজকে ভালোমানুষ সাফল্য শুধু সময়ের ব্যবধান।
– তমা হালদার
