ফেসবুকের ভুবনে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার যার যত বেশি সে ততবেশি ধনী। আজকাল আমরা কি শেয়ার করি তার হুশ আমাদের থাকে না। কেউ একজন ভুল কিছু বলেছে, সেই ক্লিপ কেটে নিয়ে সেটাতে মিউজিক লাগিয়ে ফেসবুক ছেড়ে দিচ্ছি। সেই ভিডিও শেয়ার হচ্ছে লক্ষ লক্ষবার। লোকে হাসছে, মজা নিচ্ছে, একে অন্যকে পাঠাচ্ছে।
একবারও ভেবে দেখেছেন, বিনোদনের নামে আপনি যার ভিডিও শেয়ার করছেন তার জীবনে কি ঘটছে? আপনাদের শেয়ারের মাধ্যমে তথাকথিত ‘ ভাইরাল ‘ মানুষটা সমাজে মুখ দেখাতে পারছে না। বাসা থেকে বের হতে পারছে না। তার জন্য তো সব কিছু আপনার ওই একটা শেয়ারের কারণেই শেষ হয়ে গেলো। অবশেষে তাদের বেছে নিতে হয় একটা মহাপাপে পূর্ণ পদ্ধতি। আত্মহত্যা। আর আপনারা সেটাকেও ট্রেন্ডি নিউজ বানিয়ে দেন। রসকষ লাগিয়ে লেখেন ‘ ভাইরাল সেই তরুণের আত্মহত্যা ‘ , বা ‘ ভাইরাল সেই তরুণী কেন করলো আত্মহত্যা ‘ ইত্যাদি ইত্যাদি।
একটা মাত্র ক্লিক। বুঝে শুনে করলে কি ক্ষতি হয়?
আপনি বলতেই পারেন, কেন এমন ভুল করে, ক্যামেরার সামনে এসে? না ভুল করলেই পারে, তাই না? কখনো কি শুনেছেন ‘ মানুষ মাত্রই ভুল ‘ ?
এমন কোন মানুষ নেই যে ভুল করে না। আপনিও নিশ্চয়ই শত শতাংশ নির্ভুল মানুষ নন। তেমনি একজনের ভুলকে আপনারা কেন হাসি ঠাট্টার পত্র বানিয়ে বিনোদনের তকমা লাগাচ্ছেন?
বিনোদনের মানে এই নয় কাউকে ভাইরাল করে দেয়া। যেসব লেখা বা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার মত তা ভাইরাল কতটুকুই বা হয়, যতোটা ভাইরাল একটা মানুষের ভুল কথা, বা ভুল উচ্চারণ, বা ভুল তথ্য নিয়ে বানানো ভিডিও হয়। ভিডিও শেয়ার করার আগে একবার ভেবে নিবেন, আপনি যদি ক্যামেরার সামনে থেকে ভুল কিছু ভুল করে বলে ফেলতেন। আর লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই ভিডিও ভাইরাল করে দিত তাহলে কি হতো!
এমন কতো প্রাণ এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে।
একটা শেয়ার অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে আমাদের জীবনে, আমাদের সমাজে। তাহলে কেননা একটা ভালো কিছু শেয়ার করি। ভালো কিছু হতে সাহায্য করি। বিনোদনের নামে বিশেষ করে কোন মানুষের মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ভুল কিছু নিয়ে তাকে ভাইরাল না করে, ভালো কিছু শেয়ার করি। যেন ফেসবুকের জগৎ থেকে কারো জীবনে নেতিবাচক প্রভাব না পরে। কোন প্রাণ যেন আত্মহত্যার দড়িতে না ঝুলে।
– লামিসা সানজানা
-দুরন্ত ডেস্ক





