ফ্লোরিডার ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি, টিরন আলেক্সান্ডার, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অন্তত সাতটি বিমান সংস্থার ক্রু সদস্য হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে ১২০টিরও বেশি ফ্লাইটে বিনা খরচে ভ্রমণ করেছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে নিউইয়র্ক পোস্ট ও আদালতের নথির ভিত্তিতে, যা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, টিরন আমেরিকান এয়ারলাইনস, স্পিরিট, ইউনাইটেড, ডেলটা ও সাউথওয়েস্টের মতো বড় বড় বিমানসংস্থায় নিজেকে কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফ্লাইটে চড়তেন। এই সুবিধা মূলত বৈধ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও পাইলটদের জন্য বরাদ্দ, যারা নির্ধারিত ‘ক্রু ওয়েবসাইট’-এ ঢুকে বিনা ভাড়ায় টিকিট বুক করতে পারেন। টিরন সেই ওয়েবসাইটেই প্রবেশ করে জালিয়াতি চালাতেন।
আসলে, আলেক্সান্ডার ২০১৫ সালে একটি ছোট এয়ারলাইনে কেবল গ্রাউন্ড স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন, বিমানের ভিতরের কোনও দায়িত্বে তিনি ছিলেন না। কিন্তু তিনি অন্তত ৩০টি ভুয়া ব্যাজ নম্বর ও ভুয়া নিয়োগ তারিখ ব্যবহার করে নিজেকে প্রকৃত কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ফেডারেল জুরি তাকে ওয়্যার ফ্রড (ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ব্যবহার করে প্রতারণা) এবং বিমানবন্দরের নিরাপদ এলাকায় মিথ্যা পরিচয়ে প্রবেশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই অভিযোগে তাঁর সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কারাদণ্ড, আড়াই লাখ ডলার জরিমানা এবং তিন বছরের পর্যবেক্ষণমূলক মুক্তির আদেশ হতে পারে। তাঁর সাজা ঘোষণার দিন ধার্য হয়েছে আগামী ২৫ আগস্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা এই ঘটনার তুলনা করেছেন বিখ্যাত প্রতারক ফ্রাঙ্ক আবাগনেলের সঙ্গে, যাঁর জীবনী অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও অভিনীত ‘Catch Me If You Can’ চলচ্চিত্র।
এ ঘটনা প্রমাণ করে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে এবং প্রযুক্তি-নির্ভর ভুয়া পরিচয় ব্যবস্থার অপব্যবহার কতটা বাস্তব বিপদ হয়ে উঠতে পারে।
-অংকিতা রায় চৌধুরী





