জুলহাস রহমান, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এক যুবক, যিনি শখের বশে বিমান তৈরি করেন। সংসারে অভাবের কারণে ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করার পর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেননি। জীবিকার প্রয়োজনে গার্মেন্টসে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই তার শখ ছিল বিমান তৈরি করা। দীর্ঘ চার বছরের পরিশ্রম এবং উদ্যমের পর, তিনি প্রায় দেড় শতাধিক রোবটিক বিমান তৈরি করতে সক্ষম হন। এর পর, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তিনি একটি লাইভ বিমান তৈরি করেন, যার নাম দিয়েছেন Sky By Z3।
জুলহাস নিজের হাতে তৈরি করা এই বিমানটি আকাশে উড়িয়ে দেখানোর পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং ব্যাপক প্রশংসা পেতে থাকেন। তার এই উদ্ভাবন দেখতে হাজারো মানুষ তার গ্রামের কাছের যমুনা নদীর তীরে ভিড় করেন। বিশেষত, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যমুনা নদীর বালুচরে বিমানটির পরীক্ষণমূলক উড্ডয়ন দেখতে স্থানীয় প্রশাসক, সাংবাদিকগণ, সাধারণ জনগণ ও হাজারো মানুষ উপস্থিত হন।
এই বিমানটি তৈরি করতে জুলহাস প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করেছেন, তবে বিমান তৈরির পুরো প্রকল্পে তার মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। বিমানটি তৈরির জন্য ব্যবহৃত ইঞ্জিনটি সাধারণ, মাত্র ৭ হর্সপাওয়ার ক্ষমতার, তবে এই ইঞ্জিন দিয়ে তিনি এমন একটি লাইট কপ্টার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন যা একেবারে মানুষ নিয়ে উড়তে পারে, যা একটি অবিশ্বাস্য অর্জন।
জুলহাসের এই উদ্ভাবন, যা দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি, বাংলাদেশের জন্য একটি বড় গর্বের বিষয়। তার আবিষ্কারটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে, এমনটাই মনে করছেন তার এলাকার মানুষ। এমনকি, তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে এই বিমান তৈরি করার জন্য তিনি সহায়তা পাবেন।
– উম্মে হাবিবা তানহা





