প্রিয়মুখ

কারো বিশ্বস্ত বন্ধু হতে পারাও সাধনার বিষয় -চঞ্চল চৌধুরী

বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও অন্যতম গুনী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তার সাথে তার জীবন সম্পর্কে আড্ডা দিয়েছিলো দুরন্ত প্রতিনিধি ফৌজিয়া আহমেদ পল্লী। সে আড্ডা তুলে ধরা হলো এখানে-

আমরা জানি অভিনয় জগতে আপনার যাত্রা শুরু মঞ্চনাটকের মাধ্যমে , মঞ্চ নাটকে যোগদানের গল্পটা যদি বলতেন-

উত্তরঃ অভিনয়ের প্রতি আমার ঝোঁক ছোটবেলা থেকেই।আমি জাহাঙ্গীরনগরে নাট্যকলায়, রবীন্দ্রভারতীতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম।কিন্তু ঢাকা ইউনিভার্সিটির চারুকলায় হয়ে যাওয়ায় আমি এখানেই পড়াশুরু করি। কারন ঢাকা ইউনিভার্সিটির চারুকলার প্রতি আমার অন্যরকম টান ছিলো।চারুকলায় পড়লেও অভিনয়ের প্রতি গভীর আগ্রহটা থেকেই যায়।১৯৯৬ সালে,আমি তখন দ্বিতীয় বর্ষে, একদিন আমার বন্ধু রাহুল আনন্দ(জলের গান ব্যান্ড এর ভোকালিস্ট) আমায় জানায় আরন্যক নামে একটি থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ে আগ্রহী সদস্য নিচ্ছে ।আমি তাঁদের দলে যোগ দেই। এভাবেই আমার মঞ্চ নাটকে যাত্রা শুরু।

স্যার আপনি বললেন অভিনয়ের প্রতি আপনার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। আপনার মনে এই আগ্রহ কিভাবে জন্ম নিলো?

উত্তরঃ আমাদের গ্রামে বেশ আগ থেকেই সাংস্কৃতিক চর্চা হয়ে আসছে। এই যেমন ধরো, নাচ, গান,নাটক। নাটক বলতে তখন যাত্রা-পালা হতো।তোমরা তো যাত্রা-পালা দেখোনি। তো আমাদের গ্রামে যাত্রাপালার আয়োজন আমাদের পরিবার থেকেই হতো। আর পুরুষ চরিত্রগুলোয় আমাদের গ্রামের লোকেরাই অভিনয় করতো।নারী চরিত্রের জন্য বাহির থেকে এই যেমন- খুলনা, কুষ্টিয়া ইত্যাদি থেকে অভিনেত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হতো। কারন তখন নারীদের অভিনয়ে আসার সুযোগ কম ছিলো। তো গ্রামের যারা অভিনয় করতো তারা দুই-তিন মাস আগ থেকেই রিহার্সাল শুরু করতো। মূল অনুষ্ঠানের এক বা দুই সপ্তাহ আগে অভিনেত্রী আসতো, মিউজিসিয়ান আসতো তখন তাদের সাথে রিহার্সাল হতো। আমি এসব দেখে বড় হয়েছি।তাই ছোটবেলা থেকেই আমার মাঝে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ, ভালোবাসা জন্ম নেয়।

১৯৯৩ থেকে ২০২০, দীর্ঘ ২৭ বছর আপনি ঢাকায় আছেন। এই সময়ে ঢাকার বাসিন্দাদের মাঝে কী পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন?

উত্তরঃ হ্যাঁ, এই দীর্ঘ সময়ে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমি যখন ঢাকায় আসি তখনও চিঠি-পত্রের যুগ। যোগাযোগ তখন এত দ্রুত গতির ছিলো না। মানুষের মধ্যেও অত তাড়া ছিলো না।মানুষ আরো সহজ সরল ছিলো। তার পর মোবাইল ফোন ,ইন্টারনেট এর সাথে সাথে যোগাযোগের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে ,মানুষের জীবন যাত্রা ও গতিময় হয়েছে। কিন্তু এর মাঝে হারিয়ে গেছে মানুষের পরস্পরের জন্য সহমর্মিতা, সামাজিক বন্ধন,মুল্যবোধ। চলার পথে কেউ যদি বিপদে পরে সাহায্য করার কেউ নেই। চারপাশে কী হচ্ছে তা দেখার সময়ই কারো নেই। সবাই দিন দিন অস্থির প্রকৃতির হয়ে উঠছে। পার্থক্য বলতে আমি এগুলোই বলব।

ইন্টারনেট এর এই যুগে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি ঝুঁকে পড়েছে, সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহারকারীদের মাঝে মাঝে বেশ রুক্ষ ব্যবহার করতে দেখা যায় এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কি?

উত্তরঃ এর কারন হিসেবে আমি বলবো মানুষের মাঝে অশিক্ষার প্রভাব। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করলেই যে সবাই সঠিক শিক্ষা পাচ্ছে এ ধারণা ভুল। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে ।তার মানে এই নয় যে সবার মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার এর যোগ্যতা আছে। এর পিছনে সমাজের ও পরিবারের ও দায় আছে। বর্তমানে সামাজিক কাঠামো বদলে গেছে। পরিবারের সবাই যে যার মত ব্যস্ত । তাই মানুষ সামাজিক মূল্যবোধের শিক্ষাটা পাচ্ছে না। কীভাবে অন্য ব্যক্তিকে সম্মান প্রদর্শন করতে হয় তা শিখছে না। দেখো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোমার যত বন্ধু আছে তাদের সবাই কি রুক্ষ আচরণ করে? তা তো নয়। যাদের মধ্যে অশিক্ষার প্রভাব রয়েছে তারাই এমন করে।যাদের মাঝে সুশিক্ষা রয়েছে তারা এমন করছে না ।তাই সবার সুশিক্ষা প্রয়োজন। আবার অনেকেই প্রসিদ্ধ ব্যাক্তি, তথাকথিত তারকাদের ফলো করে। এখন কেউ বিখ্যাত হয়ে গেলেই যে ব্যক্তিগত জীবনে আদর্শ মানার মতো হয়ে গেলো তা নয়। আমারা যাদের ফলো করি তারা ব্যক্তি হিসেবে কেমন, ভালো কি মন্দ তা বিবেচনা করতে হবে। অন্ধ অনুসরণ উচিত না।

বর্তমান তরুন সমাজের অধিকাংশই অবসাদ জাতীয় মানসিক রোগে ভুগছে। অনেকে আত্মঘাতী আচরণ করছে এ নিয়ে আপনার মতামত কী?

উত্তরঃ এর আমি বলবো বেশিরভাগ তরুন কনফিউশনে ভুগছে তাই তাদের মানসিক পরিস্থিতি এমন হয়েছে।পরিবার, সমাজের চাওয়া-পাওয়ার সাথে নিজেদের ইচ্ছা-আকাঙ্খার সমন্বয় ঘটাতে পারছে না। এই ক্ষেত্রে বাবা-মায়েরও অনেক দায় আছে বলে আমি মনে করি। আগে এক পরিবারে পাঁচ থেকে ছয় জন সন্তান থাকত। বাবা-মা মনে করতেন এদের মাঝে কেউ একজন তো মানুষ হবেই। আগে বাবা মায়ের চাহিদাও কম ছিলো। এখন অধিকাংশ বাবা-মায়ের এক ,বড়জোড় দুইটি সন্তান। তাদের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা সব তারা চাপিয়ে দেয় তাদের সন্তানের উপর । যে তাকে ডাক্তার নয় ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। সমাজের মাপ কাঠিতে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। কিন্তু কেউ বলে না যে সবার আগে তোকে ভালো মানুষ হতে হবে। আর যার যার প্রফেশন তাকে নিজের ইচ্ছে মত বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। বাবা-মা চায় তাদের এক সন্তানের মাঝেই সব গুণ থাকবে । কিন্তু একজনের মাঝে তো সব গুণ থাকা সম্ভব না।সেই সাথে সামজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক অস্থিরতা।রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতার ফলে তরুদের মাঝে তাৎক্ষনিক ভেবে সফল হতে চাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এ সব কিছুকেই আমি দায়ী করব তরুনদের মানসিক চাপের পেছনে।

আপনি একজন গুণী অভিনেতা আপনার এত ভালো অভিনয়ের পেছনে রহস্য কী?

উত্তরঃ অভিনয় করার আগে আমি চরিত্র নিয়ে ভাবতে, কল্পনা করতে পছন্দ করি। আমি সব সময় চরিত্রে ভিন্নতা আনতে চেষ্টা করি।চরিত্রে প্রয়োজনে আমি দৈনন্দিন জীবনে যে মানুষদের সংস্পর্শে আসি তাদের লক্ষ্য করি। তাদের কথাবলা , অঙ্গভঙ্গি এসব। ধরো আমার যদি গ্রামের মানুষের চরিত্রে অভিনয় করতে হয় তখন আমি গ্রামের প্রতিটি মানুষ কে লক্ষ্য করার চেষ্টা করি। কারন গ্রামের বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষের আচার-আচরণ, স্টাইল আলাদা হয়। লক্ষ্য না করলে তা ফুটিয়ে তোলা যায় না। আর চরিত্রে ভিন্নতা আনার জন্য চরিত্র নিয়ে কল্পনা করতে হয়, ভাবতে হয় একজন চিত্রকর যেমন ছবি আঁকার আগে মনে মনে কল্পনা করে ঠিক তেমন ভাবে একজন অভিনয় শিল্পীকেও করতে হয়।

আপনি তো বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কোন চরিত্রটিতে অভিনয় করতে বেশি মজা পেয়েছেন?

উত্তরঃ মজা প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন অর্থ বহন করে। আমি মজার কথা বলবো না তৃপ্তির কথা বলবো। কোন চরিত্রে আমি যত বেশি ভিন্নতা আনতে পেরেছি বা যত নতুন ধরণের চরিত্রে অভিনয় করতে পেরেছি তাতে তৃপ্তিও বেশি পেয়েছি।এই ক্ষেত্রে দর্শক ও অনেক বড় ভুমিকা পালন করে।আমাদের দেশের দর্শকের রুচি অনুযায়ী কাজ করলে অভিনয়ের ক্ষেত্র বিস্তৃত করা যায় না। কারন তাদের আগ্রহের জায়গায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের দেশের মানুষের শিল্পরস গ্রহনের পরিধি বিস্তৃত না।

কোন ধরণের চরিত্রে অভিনয় করতে বেশি ভালো লাগে?

উত্তরঃ নির্দিষ্ট কোন ধরন নেই তবে যে চরিত্রে অভিনয়ে ভিন্নতা, নতুনত্ব আনার সুযোগ বেশি ঐ চরিত্র গুলো করতে বেশি ভালো লাগে।

দক্ষ অভিনেতা হতে কি কি গুণ থাকা প্রয়োজন?

উত্তরঃ অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা, সততা, একনিষ্ঠ চর্চা প্রয়োজন। আজকাল যারা অভিনয়ে আসে তাদের চর্চার অভাব রয়েছে। তারা কম সময়ে বিখ্যাত হতে চায়। কিন্তু অভিনয়, গান এসব চর্চার বিষয়। এসব দির্ঘদিন ধরে চর্চা করতে হয়। মঞ্চে উঠার আগে প্রায় ১০ বছর আমি থিয়েটারের পেছনে চর্চা করেছি। রিহার্সালে অংশ নিয়েছি। সেখানে অনেক কিছু শিখেছি। এখনাকার বেশির ভাগই চর্চা বিমুখ। ফলে অভিনয়ের ক্ষেত্রে ভিন্নতা আসছে না। শিল্প আমৃত্যু চর্চার বিষয়। চর্চা করতে হবে ভিন্নতা আনার, নিজের কম্ফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসার।

আপনি অনেক দারুন গান করেন , গান নিয়ে ভবিষ্যতে কিছু করার ইচ্ছা আছে?

উত্তরঃ না। গান চর্চার বিষয়। আমি অভিনয় চর্চা করি। সবাই কিন্তু একটু আধটু গুনগুন করে।সবাই কি সংগীত শিল্পী? আমি সংগীত শিল্পী নই তাই এ নিয়ে আমার কোনো পরিকল্পনাও নেই।

বর্তমানে যারা গান গায় তাদের মাঝে কার গান বেশি ভালো লাগে?

উত্তরঃ আমি কারো নাম নিচ্ছি না তবে বর্তমানের অনেকের গান শুনেছি । কিন্তু মনে থাকার মত গান আজকাল হচ্ছে না। আমি পুরোনো দিনের গান, ফোক, ক্লাসিকাল বেশি পছন্দ করি। বর্তমানের গান গুলোর কথা হৃদয়গ্রাহী না। আর এখন তো গান ভিউ দিয়ে মূল্যায়ন হয়। গান কি ভিউ বা দেখার জিনিস? গান শোনার জন্য। বর্তমানে যারা নতুন গান করে তাদের মাঝে চর্চার অভাব রয়েছে।

আচ্ছা চঞ্চল চৌধুরী কি শুধু নামেই চঞ্চল নাকি বাস্তব জীবনেও চঞ্চল?

উত্তরঃ আচ্ছা সব মানুষ কি তার নামের মত হয় নাকি? একটা মানুষ কি করে বলতে পারবে সে চঞ্চল নাকি চঞ্চল নয়। পরিস্থিতি ও আবেগ অনুযায়ী মানুষের ব্যবহার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়। তবে আমি বলতে পারি আমি পরিমিত বোধ সম্পন্ন মানুষ।

ছোট বেলার কোন জিনিসটা খুব মিস করেন?

উত্তরঃ আমার গ্রাম। পুকুরে পড়ে থাকা, নৌকা চালানো, বন্ধুদের সাথে হেসে খেলে কাটানো সম

স্বপ্নের কোন চরিত্র আছে যেটিতে অভিনয় করতে চান?

উত্তরঃ না। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই কিন্তু উপন্যাস বা গল্পের নির্দিষ্ট কোন চরিত্র করার ইচ্ছে নেই।

শৈশব -কৈশোর এর বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ আছে?

উত্তরঃ হ্যাঁ আছে। ফেসবুকের কল্যাণে অনেকের সাথেই যোগাযোগ আছে। গ্রামে গেলে তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়। কলেজের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ আরও একটু বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সাথে সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ আছে।

আপনার চোখে বন্ধুত্ব কী?

উত্তরঃ বন্ধুত্ব অনেক বড় একটা বিষয়। বন্ধুত্বের সম্পর্ক হলো যেখানে স্বার্থ নেই। স্বার্থ থাকলে তা বন্ধুত্ব নয়। শত্রু কারা হয় জানো? শত্রু বন্ধু থেকেই হয়। কেউ যদি তোমার শত্রু হয় তার মানে সে একদিন বন্ধু ছিল। বন্ধুত্বে যখন স্বার্থ প্রবেশ করে তখন তা শত্রুতায় রুপ নেয়। কারো বিশ্বস্ত বন্ধু হতে পারাও সাধনার বিষয়।

মন খারাপ হলে কী করেন?

উত্তরঃ মনখারাপ হলে সেই সময়টা কাটানোর চেষ্টা করি। পজেটিভ কাজ করি, যাতে মন খারাপের সময়টা কেটে যায়।

খ্যাতির বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়েছে কখনো?

উত্তরঃ আমরা অভিনয় তো আমাদের দর্শকদের জন্যই করি। তাদের ভালোবাসার জন্য। কিন্তু তারা অনেক সময় সিচ্যুয়েশন বুঝতে চায় না। ধরো কোন হাসপাতালে গেলাম সেখানে এসে ছবি তুলতে চাইছে অটোগ্রাফ চাইছে। সেখানে তো কোন সমস্যার জন্যই গিয়েছি। কিংবা রাস্তায় দেখলো হুটহাট কাধে গায়ে হাত রাখে। এই জিনিস গুলো বিব্রতকর। আমাদের দেশের মানুষের আচরণগত সমস্যা আছে। কখন কি করতে হয় তারা জানে না এবং জানতে চায় না।

নিজের অভিনীত কোনো একটি চরিত্র হয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে বললে আপনি কোনটি বেছে নিবেন?

উত্তরঃ না। বিষয়টা বেশ একঘেয়ে হয়ে যাবে।

আপনি তো অনেক পরিচালকের সাথে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্রে গিয়াসউদ্দিন সেলিম, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, কলকাতার গৌতম ঘোষ আবার নাটকেও অনেক পরিচালকের সাথে কাজ করেছেন। এদের মধ্যে কার সাথে কাজ করে বেশি মজা পেয়েছেন?

উত্তরঃ তারা ছাড়াও আরও অনেকের সাথে কাজ করেছি আমি। তাদের সবার সাথেই কাজ করতে ভাল লাগে। আমি যাদের সাথে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করি তাদের সাথেই কাজ করি।

শুটিং এর ফাকে কি করেন?

উত্তরঃ বিশ্রাম করি, সাংসারিক কিছু দায়িত্ব থাকে তা পালন করি, আত্মীয়- স্বজনের খোজ নেই, ছেলের সাথে সময় কাটাই।

আপনার জীবনের সেরা মুহুর্ত কোনটি?

উত্তরঃ আমার ছেলে এখন বড় হচ্ছে তার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহুর্ত আমার কাছে সেরা।

অভিনয়ের প্রয়োজনে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে হয়েছে । কোন অঞ্চলের ভাষা রপ্ত করতে বেগ পেতে হয়েছে?

উত্তরঃ একটা মানুষ তার নিজ অঞ্চলের ভাষা সবচেয়ে ভালো পারে। অন্য অঞ্চলের ভাষা রপ্ত করা বেশ কঠিন। সালাউদ্দিন লাভলুর “স্বপ্নের বিলাত” নাটকের জন্য আমার সিলেটের ভাষা রপ্ত করতে হয়। যা বেশ কঠিন মনে হয়েছিল। পরবর্তীতে আমি সিলেটি ভাষার আর কোন নাটক করি নাই। এছাড়া নোয়াখালী আর চট্টগ্রামের ভাষাও বেশ কঠিন।

জানি মিসির আলি চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তবুও জিজ্ঞেস করছি, কোনটা ভালো লাগে? মিসির আলি না হিমু।

উত্তরঃ দুটোই সমান ভালো লাগে। যেহেতু মিসির আলি করার সুযোগ পেয়েছি তাই এই চরিত্র।

নিজের অভিনীত নাটক বা সিনেমা দেখতে কেমন লাগে?

উত্তরঃ দেখা হয়। সব ভালো লাগে না। ধরো হাজারে দু থেকে তিনশ ভালো হয়ছে। বাকি সাত আটশো ভালো হয় নি। যেগুলো ভালো হয় নি তা দেখতে ভালো লাগে না।

আমি আপনার ইন্টারভিউ নিচ্ছি, আমি আমার জায়গায় হলে চঞ্চল চৌধুরী কে কি প্রশ্ন করতেন?

উত্তরঃ কোন প্রশ্ন করতাম না।

জীবনের আদর্শ মানেন এমন কেউ কি আছে?

উত্তরঃ তেমন করে কাউকেই আদর্শ মানি না। আমার পরিবারের সদস্যদের কিছু বিশেষ গুণ রয়েছে। সেগুলো অর্জনের চেষ্টা কিছুটা আছে। বাইরের কেউ নেই।

জীবনের শেষ স্বপ্ন বা ইচ্ছে আছে কি?

উত্তরঃ তেমন ভাবে কোন শেষ স্বপ্ন ভেবে রাখা হয়নি। তবে আমৃত্যু অভিনয় চর্চা করে যাওয়ার ইচ্ছে আছে।

-ফৌজিয়া আহমেদ পল্লী,
দুরন্ত শিশু কিশোর পত্রিকা

Leave a Reply