uncategorized

শান্তনুর সাফল্যের গল্প

লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-এর ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অন্যতম মেধাবী ছাত্র শান্তনু আচার্য্য।এছাড়াও সে Max Electronics BD এবং BongoTronics এর প্রতিষ্ঠাতা।
শান্তনুর জন্ম ফেনী জেলায় তার মামার বাড়ীতে।তবে তার বেড়ে উঠা চাঁদপুর জেলায়।সে উনকিলা উচ্চ বিদ্যালয় এবং জগন্নাথপুর হাজী এরশাদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুলজীবন অতিবাহিত করেছে।বর্তমানে সে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-এর ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ছাত্র।
তার মা শ্যামলী আচার্য্য, পেশায় একজন শিক্ষিকা।তার বাবা স্বর্গীয় মন্টু চন্দ্র আচার্য্য, পেশায় কলেজ শিক্ষক ছিলেন।তার বাবার কাছে সোল্ডারিং আয়রনসহ ইলেকট্রনিক্সের ছোটখাটো কিছু যন্ত্রপাতি ছিল এবং উনি নিজেও বাসায় নিজে নিজে বিভিন্ন যন্ত্র ঠিক করার চেষ্টা করতেন।সেখান থেকেই শান্তনুর ইলেকট্রনিক্সের প্রতি আগ্রহ এবং ভালোবাসা তৈরী হয়।তার শখ ইলেকট্রনিক্স ও রোবটিক্সের বিভিন্ন পার্টস সংগ্রহ করা।এছাড়াও প্রজেক্ট তৈরী করতে এবং প্রোগ্রামিং করতে তার ভালো লাগে।
শান্তনু বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করে। ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তার প্রজেক্ট সংখ্যা ৩৫ টিরও বেশি। শান্তনুর উল্লেখযোগ্য ৫ টি প্রজেক্টের নাম হলো –
১) রোবট মীনা
২) স্মার্ট ডাস্টবিন
৩) দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য কৃত্রিম চোখ
৪) মুখের মাস্ক নির্ভরশীল সিকিউরিটি সিস্টেম
৫) স্মার্ট হাউজ
তার এই প্রজেক্টগুলোর মধ্যে ‘রোবট মীনা’ সবচেয়ে বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।রোবট মীনা নিয়ে শান্তনু জানায়, লক্ষ্মীপুরে ৪৩ তম বিজ্ঞানমেলায় রোবট মীনা প্রদর্শন করা হয়েছিল।এই মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘মোবাইল ফোনের আসক্তি পড়াশোনার ক্ষতি’, এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে মাথায় রেখে রোবট মীনাকে তৈরী করা হয়েছিল। আমরা প্রথমে জানার চেষ্টা করলাম শিশুরা মোবাইল ফোনের প্রতি কেন আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। তখন আমরা বুঝতে পারি যে ওদের খেলাধুলা করার জন্য মাঠ এবং বন্ধুর অভাব।যার ফলে তাদের কাছে টিভি ও মোবাইল ফোন বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।মূলত তাদের জন্য রোবট মীনা তৈরী করা।
রোবট মীনা শিশুদের বিনোদনের সাথে পড়াশোনা করতে সাহায্য করবে। তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিবে। এছাড়াও শিশুদের কবিতা,গান ও গল্প শোনাতে পারে এই রোবট মীনা। যার ফলে শিশুরা কিছু সময় মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকবে।তাদের জন্য রোবট মীনাকে একজন বন্ধু হিসেবে তৈরী করা হয়েছে।
পড়াশোনা ও বিনোদনের পাশাপাশি মীনাকে বাসাবাড়িতে নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা যাবে।যখন বাসাবাড়িতে কোনো প্রকার অগ্নিসংযোগ ঘটবে তখন রোবট মীনা অ্যালার্ম বাজানোর পাশাপাশি আপনার ফোনে একটি ফোন কল করবে।যার ফলে আপনি বাসায় উপস্থিত না থেকেও বুঝতে পারবেন যে বাসায় অগ্নিসংযোগ ঘটেছে।ফলে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। শান্তনু আরো জানায়, ভবিষ্যতে রোবট মীনাকে আরো উন্নত করা হবে।যাতে রোবট মীনা নিজে নিজে চলাফেরা করতে পারে।
স্মার্ট ডাস্টবিন সম্পর্কে শান্তনু জানায়, এই ডাস্টবিনটি তৈরীর উদ্দেশ্য হলো মানুষদেরকে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলতে অনুপ্রাণীত করা।এ ডাস্টবিনের সামনে যখন কেউ ময়লা নিয়ে আসবে তখন ডাস্টবিনটি সয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে। যখন ময়লাটি ডাস্টবিনে ফেলা হবে তখন ডাস্টবিনটি একটি চকলেট উপহার দিবে।
শান্তনুর প্রজেক্ট তৈরী, সার্কিট ও প্রোগ্রামিং এর সব সমস্যা সমাধানে তাকে সবসময় সাহায্য করেছে তার ভাই শারিয়ার শাওন।এছাড়াও তার এই সাফল্যের পেছনে তার মায়ের অবদান সবথেকে বেশি।শান্তনু স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে তার কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরবে।
– চৈতি দাস অদিতি, দুরন্ত প্রতিনিধি

Leave a Reply