সাহিত্য সংস্কৃতি

“জানালার ধারে তোত্তো-চান” (রিভিও)

“জানালার ধারে তোত্তো-চান”
মূল জাপানি বই: মাদোগিওয়া নো তোত্তো-চান।
লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি।
অনুবাদ: নিশুতি দীপ্তি।
প্রকাশক: আরিফুর রহমান।
প্রকাশনী: বঙ্গ বই – Bongo Boi
প্রচ্ছদ: মীর ফিরদৌসি।
মূল্য: ২০০ টাকা।
বইটি টিম বই+বাউণ্ডুলে= বইণ্ডুলে থেকে নিয়েছি আমি বইটি সম্পর্কে আদতে আমার কোনো পূর্ব ধারণা ছিলো না, ফলে বইটি যখন হাতে পাই, বইয়ের উপরের দিকের বাম কোণার “অনুবাদ-শিশুতোষ” লেখাটি দেখে ভেবেছিলাম, “সম্ভবত বাচ্চাদের কোনো বই।” সেদিন আবার আমার পরীক্ষা ছিলো কিছুক্ষণের মধ্যেই, তাই বইটি উল্টেপাল্টে না দেখেই ঝুলিতে ভরে রাখি….
Imagine my surprise after reading the preface of the book!!

মূলত “জানালার ধারে তোত্তো-চান” হলো লেখিকা তেৎসুকো কুরোয়ানাগির আত্মজীবনী মূলক একটি বই, যেখানে তিনি নিজ শৈশবজীবনে “তোমোয়ে গাকুয়েন” নামক স্কুলের প্রচলিত রীতিবিরুদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব তুলে ধরেছেন।

বইটিতে নস্টালজিক একটা ফিলিং আছে, যার কারণে আমি বইটি টানা ২ বার পড়েছি, আবার পড়বো, আগে রিভিউটা লিখে নিই।

সামগ্রিক ভাবে বইটির অনুবাদ আমার কাছে ভালোই মনে হয়েছে তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় উল্লেখ করা জরুরি।

প্রথমত, বইটিতে প্রচুর বানান ভুল আছে। বিষয়টি আমার খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে। এর চেয়েও disappointing ছিল, লেখিকা যেই স্কুলে পড়েছেন তার নাম “তোমোয়ে গাকুয়েন” এর পরিবর্তে “তোমোই গাকুয়েন” লেখা। আর প্রচ্ছদটা আমার কাছে low effort লেগেছে। আশা করি পরবর্তী সংস্করণে বিষয়গুলো সমাধান হবে।

বইটির সবচেয়ে ভালো লাগার দিক ছিল বাস্তব ঘটনাগুলো এবং ইতিহাসকে যথার্থভাবে উপস্থাপন করা। মূল জাপানি বই থেকে সরাসরি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে বলে বাংলা ভাষায় আবেগ ও অনুভূতির প্রকাশ ছিল হৃদয়স্পর্শী। বইটি শেষ করার পর যে bittersweet feeling আপনি পাবেন, তা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে তোমোয়ে গাকুয়েনের প্রধান শিক্ষক সোসাকু কোবাইয়াশির আদর্শকে নিজের মাঝে ধারণ করতে।

Rating: overall 8/10
*Highly Recommended*

P.S. মি. কোবাইয়াশি তাঁর এই ব্যতিক্রমী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ হারুজি নাকামুরার শিক্ষা পদ্ধতি দ্বারা। শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা প্রকৃতি নির্ভর, আনন্দদায়ক ও স্বতঃস্ফূর্ত হওয়া যে কতটা জরুরি, বোধ করি মি. কোবাইয়াশি এবং মি. নাকামুরা ব্যতীত বিংশ শতাব্দীর জাপানে আর কেউ তেমন করে বোঝে নি!

বুশরা ফেরদৌস