প্রখ্যাত আণবিক বিজ্ঞানী, গবেষক ও বিজ্ঞানলেখক রেজাউর রহমান আর নেই। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে রেজাউর রহমানকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৫ অক্টোবর তাঁর ওপেন হার্ট সার্জারি সম্পন্ন হয়। এরপর কিছুটা সুস্থতার আভাস পেলেও গতকাল শনিবার থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। আজ সকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। রেজাউর রহমানের মৃত্যুতে স্ত্রী হালিমা রহমান, দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা রহমান ও মঞ্জুলিকা রহমানসহ অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী ও গুণগ্রাহী শোকসন্তপ্ত। তিনি ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বড় ভাই। পরিবার জানিয়েছে, রেজাউর রহমানের মরদেহ আপাতত ল্যাবএইড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাঁর ছোট মেয়ে দেশে ফেরার পর দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ১৯৪৪ সালে জন্ম নেওয়া রেজাউর রহমানের পিতা ছিলেন ফজলুর রহমান ও মাতা লুৎফুন্নেসা। তিনি ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে এমএসসি সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে দীর্ঘ ৩৫ বছর গবেষণায় যুক্ত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতাও করেছেন। বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে রেজাউর রহমান ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক, জনপ্রিয় বিজ্ঞানগ্রন্থ, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও গল্প লিখে পাঠকসমাজে বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেন। বিজ্ঞানচর্চায় অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। বিজ্ঞানচর্চা ও জ্ঞানচর্চার প্রসারে আজীবন নিবেদিতপ্রাণ এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুতে দেশের বিজ্ঞান অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
-অংকিতা রায় চৌধুরী





