১৮ বছরের এক গৌরবময় ইউরোপীয় অধ্যায় শেষে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলকে বিদায় বললেন আর্জেন্টাইন তারকা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে বেনফিকার বিদায়ের মধ্য দিয়েই শেষ হলো তার ইউরোপ অধ্যায়। ম্যাচশেষে চোখের জলে মাঠ ছাড়েন তিনি।
ডি মারিয়া আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, ক্লাব বিশ্বকাপই হবে ইউরোপে তার শেষ প্রতিযোগিতা। এরপরই ফিরবেন নিজের শৈশবের ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রালে। বেনফিকার সমর্থকেরাও সে উপলক্ষে তার খেলার প্রতি নজর রেখেছিলেন। গ্রুপ পর্বে তিনটি গোল করে তিনি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতার স্থান।
শেষ ষোলোতে চেলসির বিপক্ষে ম্যাচে শেষ সময়ে এক পেনাল্টি থেকে গোল করে বেনফিকাকে সমতায় ফেরান ডি মারিয়া। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে শেষ পর্যন্ত আর জয়ের দেখা পায়নি তার দল, আর সেই ম্যাচেই শেষ হয় ডি মারিয়ার ইউরোপীয় অধ্যায়।
ডি মারিয়ার ইউরোপ যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে, বেনফিকায় যোগ দেওয়ার মাধ্যমে। সেখান থেকে ২০১০ সালে পাড়ি জমান রিয়াল মাদ্রিদে, যেখানে কাটান চার বছর এবং জেতেন ছয়টি বড় শিরোপা, যার মধ্যে আছে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগও।
এরপর পিএসজিতে যোগ দিয়ে সাত বছরে জেতেন ১৯টি ট্রফি, যার মধ্যে পাঁচটি লিগ শিরোপা। তবে ২০২০ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে শিরোপা অধরাই থেকে যায়।
জুভেন্টাসে একটি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের পর ২০২৩ সালে আবারও বেনফিকায় ফিরে আসেন। এবারের ফেরাটা ছিল বিদায়ের পূর্ব মুহূর্ত হিসেবে।
৩৭ বছর বয়সেও ডি মারিয়া ছিলেন দলের প্রধান ভরসা। ক্লাব বিশ্বকাপে বেনফিকার সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনিই। তার খেলার ধরনে ছিল নীরব আত্মবিশ্বাস—নিজেকে প্রচারের চেয়ে কাজে বিশ্বাসী ছিলেন বরাবর।
তিনি একমাত্র খেলোয়াড় যিনি কোপা আমেরিকা, ফিনালিসিমা ও বিশ্বকাপ ফাইনাল—সব জায়গাতেই গোল করেছেন। ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন তিনি, আর দেশের পক্ষে হয়েছেন বর্ষসেরা ফুটবলারও। তবুও ছিলেন প্রচারের আড়ালে।
এখন ডি মারিয়ার সামনে শুধু রয়ে গেছে নিজের শহরের ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলা। ইউরোপ থেকে বিদায় নিয়েও তার প্রভাব ও জনপ্রিয়তা থাকবে অটুট। খুব একটা জাঁকজমক ছাড়াই তিনি হয়তো শেষ করবেন নিজের ক্যারিয়ার—তবে রেখে যাবেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
– অংকিতা রায় চৌধুরী





