আজ, ২৯ মে ২০২৫, ঢাকায় ভোর থেকে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে শহরের বাতাসের মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। ঢাকায় আজকের সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তনই আনেনি, এটি রাজধানীবাসীর জন্য ছিল একপ্রকার স্বস্তির নিঃশ্বাস। গ্রীষ্মের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে যে অসহ্য গরম ও দাবদাহ সৃষ্টি হয়েছিল, তা থেকে এই বৃষ্টি অনেকটা পরিত্রাণ দিয়েছে। সাধারণত, বৃষ্টির মাধ্যমে বাতাসের ধুলিকণা ও অন্যান্য দূষণকারী উপাদান ধুয়ে যায়, ফলে বায়ুর মান উন্নত হয়। এই বৃষ্টি শুধু প্রকৃতির এক স্বাভাবিক ঘটনা নয়, এটি ছিল ঢাকাবাসীর জন্য একরকম ‘প্রাকৃতিক আশীর্বাদ’ যা শরীর, মন এবং পরিবেশকে একসাথে শান্তি দিয়েছে।
তবে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে যে, বৃষ্টির পর বাতাসের মান সাময়িকভাবে উন্নত হলেও, বৃষ্টি থেমে গেলে দ্রুতই আগের দূষিত অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, গত বছরের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বৃষ্টির পর ঢাকার বায়ুমান সূচক (AQI) ১২০-তে নেমে এলেও, পরদিন সকালেই তা ১৬৫-এ পৌঁছে যায়, যা “অস্বাস্থ্যকর” হিসেবে বিবেচিত।
বর্তমানে, বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাতাসের মান উন্নত হলেও, এই পরিস্থিতি স্থায়ী হবে কিনা তা নির্ভর করবে পরবর্তী কয়েক দিনের আবহাওয়া ও শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উপর। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, যাতে নগরবাসী সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশে বসবাস করতে পারে।
এ বৃষ্টির কতটা এবং কেন জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছিল নিজের তা বিশ্লেষণ করা হলো:
১. প্রচণ্ড গরম থেকে মুক্তি
গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় তাপমাত্রা ৩৮–৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ঘুরপাক খাচ্ছিল, যা “Heatwave” হিসেবে বিবেচিত হয়। এর ফলে: জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন শিশু ও বৃদ্ধরা বিদ্যুৎচাপের কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছিল।
আজকের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে নেমে এসেছে, যা শরীর ও মন দুই-ই শান্ত করেছে।
২. বাতাসের মান উন্নয়ন
বৃষ্টির ফলে:বায়ুতে থাকা ধুলা ও অ্যালার্জেন ধুয়ে গেছে AQI (Air Quality Index) “খারাপ” বা “অস্বাস্থ্যকর” থেকে “সহনীয়” বা “ভালো” অবস্থানে এসেছে। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের জন্য এটি ছিল আশীর্বাদস্বরূপ।
৩. পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য সুফল
গাছপালা ধোয়ে গিয়ে আবার সতেজ হয়ে উঠেছে। মাটি আর্দ্রতা ফিরে পেয়েছে, যা কৃষি বা শহরের গাছের পক্ষে সহায়ক। জলাধার ও ড্রেনগুলো কিছুটা পরিস্কার হয়েছে।
৪. মানসিক প্রশান্তি ও ঘরোয়া জীবনযাত্রায় স্বস্তি
প্রচণ্ড গরমে মানুষ ছিল চরম বিরক্ত ও রেগে থাকা অবস্থায় ঠান্ডা বৃষ্টির শব্দ ও আবহাওয়ার বদল মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে অনেকেই চায়ের কাপ হাতে বসে বৃষ্টির রোমান্টিকতা উপভোগ করেছেন।
যদিও এই বৃষ্টি আরামদায়ক, তবে:
কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে
রাস্তাঘাটে যানজট ও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাই সকলের পূর্ববর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত।
– ফাতেমা বিনতে সেলিম





