সাম্প্রতিক খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত দেশ

তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত দেশ: হিট স্ট্রোকে মৃত্যুঝুঁকি, সচেতন হোন সবাই

সারা দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অসহনীয় তাপপ্রবাহ। অনেক জায়গায় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। শুধু শহর নয়, গ্রামাঞ্চলেও রেহাই নেই এই প্রচণ্ড গরম থেকে। আবহাওয়া অফিস আরও তিন দিনের জন্য ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এটি শুধু গরম নয়, মানুষের জন্য ভয়ংকর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে—হিট স্ট্রোক হচ্ছে এক নীরব ঘাতক।

হিট স্ট্রোক কী এবং কেন হয়?

হিট স্ট্রোক তখনই হয় যখন শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে গিয়ে ঘামের প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। এতে শরীর নিজে থেকে ঠাণ্ডা হতে পারে না, ফলে শরীরের ভেতরে অতিরিক্ত উত্তাপ জমে গিয়ে মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ঝুঁকিতে কারা বেশি?

1.শিশু ও কিশোররা, যারা দিনের বেলায় খেলতে বা স্কুলে যেতে বের হয়।

2.প্রবীণ ব্যক্তি, যাদের শরীর সহজে গরম সহ্য করতে পারে না।

3.রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন

4.মাঠে, রাস্তায় বা রোদের মধ্যে কাজ করেন এমন শ্রমজীবী মানুষ।

সতর্কতা ও করণীয়

হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো সবাইকে মানতে হবে—

1. রোদ এড়িয়ে চলুন: সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

2. প্রচুর পানি পান করুন: ঘাম কম হলে বা পিপাসা না পেলেও পানি খেতে হবে।

3. ঢিলেঢালা, হালকা রঙের জামা পরুন।

4. রোদে কাজ করলে মাথায় কাপড় বা ছাতা ব্যবহার করুন।

5. ঘরের জানালা খোলা রাখুন, বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন।

6. অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

সতর্কতা লক্ষণ

🖊️.প্রচণ্ড মাথাব্যথা
🖊️.চোখে অন্ধকার দেখা
🖊️ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া
🖊️.শরীর কাঁপা বা খিঁচুনি
🖊️. বমি বমি ভাব বা বমি
🖊️.প্রস্রাব কমে যাওয়া বা হলুদ হয়ে যাওয়া
🖊️.জ্ঞান হারানো

সবাইকে নিয়ে ভাবুন

এই পরিস্থিতিতে শুধু নিজের নয়, আশেপাশের মানুষদের প্রতিও নজর রাখা জরুরি। ছোট ভাইবোন, দাদা-দাদি, কাজের মানুষ, এমনকি রাস্তায় কাজ করা মানুষদের এক বোতল পানি দিয়ে হলেও পাশে দাঁড়ানো যায়।গরম আমাদের থামাতে পারবে না, যদি আমরা সচেতন থাকি। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য। তাই দরকার সঠিক তথ্য, সময়মতো পদক্ষেপ, আর একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা।

– অংকিতা রায় চৌধুরী